কুড়িগ্রামে বৈশাখী ঝড় ধান পানিতে কৃষকরা দিশেহারা
রুহুল আমিন রুকু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রাম জেলার৯টি উপজেলায় শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা মাড়াই কাজ। সোনালি ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ঠিক এমন সময়ে টানা বৃষ্টির পানিতে বোরো ধান ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। জেলার নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানের পাকা ও আধা পাকা ধান বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তাড়াহুড়ো করে কেটে তুলছেন তারা।
রবিবার (১৫ মে) দুপুরে সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক স্থানের পাকা ও আধা পাকা বোরো ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় দিশেহারা কৃষকরা। শ্রমিক সংকটের কারণে নিরুপায় হয়ে পরিবারের ছোট বড় সবাই মিলে পানিতে নেমে বোরো ধান কাটছেন। পরে তা কাঁধে করে উঁচু স্থানে তুলছেন।এ সময় বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানান, অধিকাংশ বোরো ধান পেকেছে। তবে এখনও কিছু কিছু ক্ষেতের ধান আধা পাকা রয়েছে। পাকা ধান কাটতে অনেক কৃষক পরিবারই ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিন্তু টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে অনেকেরই পাকা ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে অনেকের মোট ফসলের তিন ভাগের এক ভাগ ক্ষতি হবে। আর যাদের আধা পাকা বোরো ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে তাদের মোট ফসলের অর্ধেক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের চর সিতাইঝাড় নয়ারহাট বাজারের কৃষক ইছব আলী বলেন, এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের টাকায় সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ২৯-জাতের বোরো ধান আবাদ করেছি। ধান পাকার আগেই পুরো ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। বাধ্য হয়েই সেই ক্ষেত থেকে ধান কাটছি।কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক ছোমেদ আলী বলেন, বৃষ্টির পানিতে আমাদের ৫০শতক জমির বোরো ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। শ্রমিক না পাওয়ায় আমরা পরিবারের সবাই মিলে কষ্ট করে ধান কাটছি। তা না হলে পুরো ধানক্ষেত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
একই ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামের কৃষক ভোলা আমিনের ধান কাটতে আসা শ্রমিক সোহরাব আলী বলেন, কৃষক মহব্বত আলীর ৪ বিঘা জমির বোরো ধানক্ষেত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত অর্ধেক ক্ষেতের ধান কাটা হয়েছে। কিন্তু অর্ধেক ক্ষেত পানিতে তলিয়ে থাকায় ধান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়াও জানান রবিবার মধ্যরাতে প্রচন্ড ঝড় হয় পরিস্থিতি আরও কৃষকদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি করছে। রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সবুর হোসেন এ প্রতিবেদককে রবিবার বিকেল পাঁচটায় মুঠোফোনে বলেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় জেলায় ২০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রংপুর বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়ার পূর্বভাস বলা হয়েছে।